আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন দিবস। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সে হিসেবে এবার পালিত হচ্ছে ২৩তম সুন্দরবন দিবস। সুন্দরবন, বঙ্গোপসাগরের ব-দ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। জোয়ার-ভাটার পানিপথ, জমি এবং বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ ও প্রাণীজগত নিয়ে গড়ে উঠা এ জটিল জালিকা উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখে এবং বাংলাদেশের বাস্তুতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ২০২৪ সালের রাইজিং টাইডস, রোরিং ফিউচার্স: দ্য সুন্দরবন স কোয়েস্ট ফর সার্ভাইভাল শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৭৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের ভূমি আবরণে পরিবর্তন ঘটেছে। ঘন বনের পরিমাণ কমে গেছে, আর জলাভূমির আয়তন বেড়েছে। এটি আবাসস্থল হারিয়ে যাওয়া এবং বিভাজনের ইঙ্গিত দেয়। এদিকে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপার) উদ্যোগে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সুন্দরবন বিনাশী সব ধরনের অপতৎপরতা বন্ধের’ দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। এর আগে সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পায়। জানা গেছে, সুন্দরবনের অধিকাংশ গাছপালা ম্যানগ্রোভ ধরনের। উদ্ভিদবিজ্ঞানী ডি প্রেইন সুন্দরবনে ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে বলে উল্লেখ করেন। পৃথিবীতে এ পর্যন্ত সন্ধানপ্রাপ্ত ৫০টি ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের মধ্যে সুন্দরবনেই আছে ৩৫টি। এছাড়াও সুন্দরবনে রয়েছে প্রায় ৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫০ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩২০ প্রজাতির পাখি, ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী ও ৪০০ প্রজাতির মাছ। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার পৃথিবী বিখ্যাত। এছাড়া রয়েছে চিত্রা ও মায়া হরিণ। বর্তমানে সুন্দরবনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও বরগুনা জেলায় এ বনের অবস্থান। সুন্দরবন পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এ বনের ৬২ শতাংশ বাংলাদেশে এবং বাকি ৩৮ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।